চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের বৈশিষ্ট্য : বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যায় প্রবর্তিত প্রথম স্থায়ী ভূমি বন্দোবস্ত ছিল চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত। গভর্নর জেনারেল লর্ড কর্নওয়ালিস এই বন্দোবস্ত চালু করেন (২২ মার্চ, ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দ।
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের বৈশিষ্ট্য –
বংশানুক্রমিক অধিকার
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে জমির মালিকানা জমিদারদের দেওয়া হয়েছিল। বার্ষিক খাজনা সময়মতো সরকারকে জমা দিতে সক্ষম হলে জমিদাররা বংশানুক্রমিকভাবে জমির মালিক থাকবে বলে ঘোষিত হয়েছিল।
সূর্যাস্ত আইন
বাংলা বছরের শেষ দিন সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে জমিদারদের দেয় রাজস্ব সরকারকে জমা দিতে হত। নচেৎ জমিদারি নিলাম করে তা অন্য জমিদারকে দিয়ে দেওয়া হত।
স্থায়ী রাজস্ব
এই ব্যবস্থায় চিরদিনের জন্য রাজস্ব স্থির হয়। কোনো অবস্থাতেই রাজস্ব হার বদল হবে না বলে ঘোষিত হয়।
মধ্যস্বত্বভোগী শ্রেণি
এই ব্যবস্থায় কৃষক ও সরকারের মাঝে জমিদারশ্রেণি ছিল। কৃষকদের কাছ থেকে আদায়ীকৃত রাজস্বের ১০/১১ ভাগ সরকারকে জমা দিতে হত। আর ১/১১ ভাগ জমিদাররা বংশানুক্রমিকভাবে ভোগ করত। সমাজে এই শ্রেণি মধ্যস্বত্বভোগী নামে পরিচিত হয়।
রাজস্ব আদায়ে কঠোরতা
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে কঠোরভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব আদায় করা হত। খরা, বন্যা, মহামারি বা অন্য যে-কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে রাজস্ব মকুব করা হত না।
উপসংহার
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের বৈশিষ্ট্যগুলি ছিল শোষণমূলক। এই ভূমি বন্দোবস্ত কৃষকের স্বার্থে করা হয়নি- হয়েছিল শোষকশ্রেণির অর্থাৎ জমিদার ও সরকারের স্বার্থে; এমনকি ভূমিরাজস্বের হারও ছিল বেশ চড়া।
====>>> সমুদ্রজলের উষ্নতার তারতম্যে